জাতীয়
মসজিদ, রাস্তায় ও খোলা আকাশে পর্যটকদের রাত যাপন

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিভিন্ন দেশ ভিসা বন্ধ রাখায় গত একবছর ভ্রমণ পিপাসু মানুষ দেশের বাইরে ঘুরতে যেতে পারেনি। ঘরের মধ্যে একপর্যায় বন্দি অবস্থায় ছিলেন।








তবে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা আসায় মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ভীতি কমায় ভ্রমণ পিপাসু মানুষ দেশিয় পর্যটন স্পর্টগুলোয় ভিড় জমানো শুরু করেছেন।
একুশে ফেব্রুয়ারিসহ বেশ কয়েকদিন সরকারি ছুটি থাকায় ভ্রমণ পিপাসু মানুষ কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানে ভিড় জমিয়েছেন।








কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়। হোটেল-মোটেল কিংবা রিসোর্টে জায়গা না পেয়ে সৈকত, মসজিদ, রাস্তা ও বিচের খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন পর্যটকরা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মতে, সরকারি ছুটিতে সমুদ্র সৈকতে এবার উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এখানে প্রায় ৫ লাখ মানুষ পর্যটন শহরটিতে অবকাশ যাপন করছেন।








কক্সবাজারের গোল্ডেন হিল হোটেলের মহাব্যবস্থাপক জয়নুল আবেদিন বলেন, করোনা মহামারি সময়ে পর্যকরা ঘরবন্দি অবস্থায় ছিলেন। এখন মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন। সেজন্য কক্সবাজারের পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। গত দু’দিন হোটেল অতিথি ভর্তি ছিলো। আজও রয়েছে। তবে আগের দু’দিনের তুলনায় কিছুটা কম। হোটেল-মোটেলে সিট সংকট থাকায় অনেক পর্যটকদের রাস্তায় ও বিচের খোলা জায়গায় রাত কাটাতে দেখেন।








পর্যটকদের সামাল দিতে স্থানীয় মসজিদগুলোও সারা রাত খোলা ছিল বলে জানান তিনি। যেখানে অনেক পর্যটক রাত কাটিয়েছেন। এছাড়া যেসব রেস্তোরাঁ এবং বার রাত বারোটার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া সেগুলোও সারারাত খোলা ছিল।
কক্সবাজারের গোল্ডেন হিল হোটেলের মহাব্যবস্থাপক বলেন, পর্যটকদের এমন ভিড় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর দেখেছেন।
নিসর্গ হোটেল এন্ড রিসোর্টের হেড অব অপারেশনস মোহাম্মদ ফখরুল আলম শোভন বলেন, গত ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি উপচে পড়া ভিড় ছিলো। তাদের হোটেলটি কিছুটা দূরে হলেও গত দুই দিন কোন রুম খালি ছিল না। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ওই দুই দিনের জন্য তাদের হোটেলের সব রুম বুক হয়ে গিয়েছিল।








কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, এবার বিভিন্ন কারণে কক্সবাজারে পর্যটক বেড়েছে। এক সাথে অনেক পর্যটক যাওয়ার কারণে ব্যবস্থাপনায় সমস্যা তৈরি হয়। একে তো শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটি। তার সাথে একুশে ফেব্রুয়ারির কারণে আরো একদিন ছুটি যোগ হয়েছে। যার কারণে মানুষ ঘুরতে বের হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামশাদ নওরীণ বলেন, করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা, ভ্যাকসিন নেয়া শুরু হওয়া, এক সাথে বেশ কয়েক দিন ছুটি এবং আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে মানুষ কক্সবাজারকে তাদের বিনোদনের কেন্দ্র ধরে নিয়ে সেখানে ভিড় করেছে। এছাড়া প্রতিদিন কমবেশি ৫০ হাজার পর্যটক যাওয়া-আসা করেন।